Sunday, December 24, 2017


আলু / Potato
আলু বহুল প্রচলিত উদ্ভিজ্জ্জ খাদ্য। এটি কন্দজাতীয় (tuber) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আদি উৎস ভারত, এশিয়া মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬শ শতকে এটি সারা
বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম। এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম খাদ্যশস্য, এর আগে রয়েছে যথাক্রমে ভুট্টা, গম এবং চাল।
পৃথিবীর খাদ্য হিসেবে সর্বপ্রথম আলুর নির্দশন ভারতের বাংলায় দেখা যায়। পালযুগের কবি সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতে বারাহী কন্দের উল্লেখ আছে। এই বারাহী কন্দ হল উচ্চমানের আলু, রতিকান্ত্র ত্রিপাঠী জানাচ্ছেন "প্রাচীন বাংলার শিলা ও তাম্রলিপিতে সমাজ ও সংস্কৃতি" বইটিতে।
আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। আলু'র বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum(সোলানাম টিউবারোসাম)। এতে একদিকে যেমনি ভাতের মতো শর্করা আছে তেমনি সবজির মতো ফাইবার বা তন্তু, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ্জ প্রোটিন আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুতে শর্করা আছে ১৯ গ্রাম, খাবার আঁশ
২.২ গ্রাম, উদ্ভিদ প্রোটিন ২ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৫২ গ্রাম যার মধ্যে পটাশিয়াম লবণই ০.৪২ গ্রাম, এবং ভিটামিন ০.০২ গ্রাম। অপরদিকে ১০০ গ্রাম চালে ৮০ গ্রাম শর্করা, খাবার আঁশ ১.৩ গ্রাম, উদ্ভিজ্জ্জ প্রোটিন ৭.১৩ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.২৮ গ্রাম এবং ভিটামিন আছে মাত্র ০.০০২ গ্রাম। তাই আলুর মধ্যে ভাতের তুলনায় শর্করা কম থাকলেও অন্যান্য উপাদান বেশি আছে। প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ বেশি থাকায় এটি একটি সুষম খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
জাতিসংঘ এফএও-এর রিপোর্ট মতে সারা পৃথিবীতে আলু উৎপাদন ২০১৩ সালে ছিল ৩৬৮ মিলিয়ন টন। একজন ব্যক্তি প্রতিবছর প্রায় ৩৩ কেজি আলু খায়।
আলু একটি বহুবর্ষজীবী টিউবেরাস ফসল যা সোলানেসিয়া গোত্রের অন্তর্গত। আসলে এর খাওয়ার উপযোগী টিউবারের কারণেই এটির আলু নামকরণ। আলুর ইংরেজি শব্দ পটেটো এসেছে স্প্যানিশ পাতাতা থেকে। রেয়াল আকাদেমিয়া এস্পানিওলা'র (স্প্যানিশ রয়েল
একাডেমি) তথ্য অণুযায়ী এই স্পেনীয় শব্দটি তাইনো শব্দ বাতাতা (মিষ্টি আলু) এবং কেচুয়া শব্দ পাপা (আলু) থেকে উদ্ভূত। পাতাতা বলতে প্রথমদিকে মুলত সাধারণ আলু অপেক্ষা মিষ্টি আলুকেই বেশি বোঝানো হত, যদিও এই দুই ধরনের আলুর মধ্যে বাস্তবে কোনও মিল নেই। দুই ধরনের আলুর এই নামসংকট অনেকদিন চলেছে। ষোড়শ শতাব্দীতেও ইংরেজ উদ্ভিদবিদ জন জেরার্ড যে আলুকে বোঝাতে “বাস্টার্ড পটেটো” এবং “ভার্জিনিয়া পটেটো” নামক দুইটি শব্দ ব্যবহার করেন তা এই নামবিভ্রাট থেকে মুক্তির লক্ষ্যেই। কিন্তু তিনিও মিষ্টি আলুকে সাধারণ আলু বলেই অভিহিত করেন। যাইহোক, বর্তমানে আলু ও মিষ্টি আলু নিয়ে এই নামবিভ্রাট সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
পুষ্টি উপাদান
প্রতি 100 গ্রাম পরিমাণ
ক্যালোরি                                      77
মোট ফ্যাট                              0.1 গ্রাম 0%
পরিপূর্ণ চর্বি                             0 গ্রাম 0%

পলিউস্যাচুরেটেড ফ্যাট        0 জি
Monounsaturated চর্বি             0 জি
কোলেস্টেরল                           0 মিলিগ্রাম 0%
সোডিয়াম                              6 মিলিগ্রাম 0%
পটাসিয়াম                          421 মিলিগ্রাম 1২%
মোট কার্বোহাইড্রেট            17 গ্রাম 5%
খাদ্যতালিকাগত ফাইবার ২২ গ্রাম 8%
চিনি                                                0.8 গ্রাম
প্রোটিন                                            ২ জি 4%
ভিটামিন এ                           0% ভিটামিন সি 32%
ক্যালসিয়াম 1% আয়রন 4%
ভিটামিন ডি 0% ভিটামিন বি -6 15%
ভিটামিন বি -12 0% ম্যাগনেসিয়াম 5%
* শতাংশ দৈনিক মূল্য 2,000 ক্যালরি খাদ্য উপর ভিত্তি করে। আপনার ক্যালোরি চাহিদার উপর নির্ভর করে আপনার দৈনন্দিন মানগুলি উচ্চ বা কম হতে পারে
লুচি-আলুর দম
লুচি
লুচি তৈরিতে যা যা লাগবে, ময়দা ১ কাপ, লবণ ১ চিমটি, ঘি ১ চা চামচ, পানি পরিমাণ মত, ভাজার জন্য সয়াবিন তেল।
যেভাবে বানাবেন
ময়দা, লবণ ও ঘি একসঙ্গে মেশাতে হবে। অল্প করে পানি মিশিয়ে ময়ান বানাতে হবে। ময়ান তৈরি হয়ে গেলে ও নরম হলে ভেজা একটি সুতি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে ২০ মিনিট। এরপর ময়ান থেকে ছোট ছোট বল বানিয়ে রুটির মত পাতলা করে বেলে নিতে হবে। এবার ডুবো তেলে ভেজে নিলেই তৈরি হবে লুচি।
আলুর দম
আলুর দম সব চাইতে মজাদার হয় নতুন আলু দিয়ে কিংবা বগুড়ার আলু দিয়ে তৈরি করলে। বানাতে এমন কোনো বাড়তি সময় লাগে না, এবং পরিবেশন করা যায় ভাত- লুচি, রুটি ও পরোটার সঙ্গেও।
উপকরণ:
আলু ডুমো করে কাটা- ২ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, পিঁয়াজ
বেরেস্তা ১/৪ কাপ, হলুদ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১/২ চা চামচ, জিরা ভাজা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ইচ্ছেমত, পাঁচ ফোড়ন ১ চা চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা ইচ্ছেমত, লবণ স্বাদমত। চাইলে রসুনের কোয়াও দিতে পারেন বেশ কয়েকটি।
প্রণালী:
এক চিমটি হলুদ দিয়ে আলু আধা সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াইতে তেল দিয়ে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে একটু ভাজুন। হলুদ, মরিচ, ধনিয়া ও লবণ দিন। অল্প পানি দিয়ে ভালো করে কষান। আলু দিয়ে দিন, অল্প একটু পানি দিন। ফুটে উঠলে পিঁয়াজ বেরেস্তা ও জিরা গুঁড়া দিয়ে দিন। ঢাকনা দিয়ে রান্না করুন। পানি টেনে আসলে ভালো করে নেড়ে আলুগুলো একটু ভাঙ্গা ভাঙ্গা করে দিন।
এবার আরেকটা প্যানে ঘি গরম করুন, তাতে পাঁচ ফোড়ন দিয়ে দিন। এবং পুরো মিশ্রণটা আলুর মাঝে ঢেলে দিয়ে বাগাড় দিন। খেয়াল রাখবেন পাঁচ ফোড়ন যেন পুড়ে না যায়, তাতে পুরো খাবারে তিতা ভাব চলে আসবে। গরম গরম লুচির সাথে পরিবেশন করুন।
স্পাইসি আলুর দম রেসিপি
উপকরণ
আলু সিদ্ধ – ৪-৫ টি ( বড়)
আদা , রসুন বাটা- ১ চা চামচ
জিরা , ধনিয়া , এলাচ , দারুচিনি বাটা – ১/২ চা চামচ
শুকনা মরিচ বাটা – সামান্য
পেয়াজ বাটা – ১ টেবিল চামচ
পেয়াজ কুচি – ২ টেবিল চামচ
হলুদ – সামান্য
টেস্টিং সল্ট – ১/২ চা চামচ
রাঁধুনি গরুর মাংসের মসলা – ১ টেবিল চামচ
তেজপাতা – ১-২ টি
তেল – ২-৩ টেবিল চামচ
ধনিপাতা কুচি – ১ টেবিল চামচ
প্রণালি
আলু কিউব করে কেটে নিন । আলু একটু কম সিদ্ধ করে নিবেন । বেশি সিদ্ধ হলে শেপ ঠিক থাকবেনা ।
এবার প্যানে তেল গরম করে পেয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে নিন। চুলার আচ কমিয়ে সব বাটা মশলা ও গুঁড়া মশলা দিয়ে দিন। মশলা অল্প পানি দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। তেজপাতা দিয়ে দিন।
মশলার ঘ্রান আসলে আলু দিয়ে নাড়াচাড়া করে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মরিচ এবং হলুদ পরিমান মতো দিবেন। কারণ প্যাকেট মশলায় হলুদ আর ঝাল একটু বেশিই থাকে।
কিছুক্ষণ পর পর নেড়েচেড়ে দিন তা না হলে নিচে পোড়া লেগে যেতে পারে। ৮-১০ মিনিট পর ঝোল মাখা মাখা করে ধনিয়াপাতা ও টেস্টিং সল্ট দিয়ে নামিয়ে নিন।

কাশ্মিরি আলুর দম
উপকরণ
আলু বড় টুকরা বা ছোট আলু হলে আস্ত (খোসাসহ) ৫০০ গ্রাম। তেল ৩-৪ টেবিল-চামচ। আস্ত জিরা আধা চা-চামচ। সরিষা আধা চা-চামচ। পেঁয়াজ মোটা কুচি আধা
কাপ। টমেটোকুচি ১টি। গরম পানি দেড় কাপ।
মসলা মিশ্রণ
টকদই আধা কাপ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ। হলুদগুঁড়া এক চিমটি, লবণ ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ। জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ— সব একসঙ্গে মিশিয়ে আলাদা করে রাখতে হবে।
পদ্ধতি
তেলে আলু ভালোভাবে ভেজে নিন। হালকা বাদামি রং আসবে। এরমধ্যে জিরা, সরিষা আর পেঁয়াজ দিন। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসা পর্যন্ত ভাজুন। তারপর টমেটো দিন। টমেটো গলে গেলে আগে করে রাখা মসলার মিশ্রণ দিয়ে ৪/৫ মিনিট ভাজুন।
গরম পানি দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রাখুন ৩০ মিনিট। আলু সিদ্ধ হয়ে আসবে। এবার বেশি আঁচে আলু রান্না করে মাখা মাখা করে ফেলুন।
ধনেপাতার কুচি আর কাঁচামরিচের কুচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন
মুচমুচে আলুর লুচি
যা যা লাগবে :
সেদ্ধ করা আলু ৩ টি,
গমের আটা -১ কাপ

সুজি – ১ চামচ
গরম মশলা গুড়া ১/২ চামট,
তেল পরিমাণমতো,
লবণ পরিমাণমতো
মরিচের গুড়া স্বাদমতো
বানানোর পদ্ধতি :
প্রথমে সেদ্ধ আলু ভালো করে চটকে নিন। আটার মধ্যে গরম মশলা গুড়া , লবণ, মরিচের গুড়া মিশিয়ে নেবেন। এবার সেই আটা দিয়ে আলু মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। 
আটা মাখা হয়ে গেলে লুচির মত লেচি বেলে নিন। ডুবোতেলে ভেজে নিন। চাইলে আপনি লেচিকে সুজির গুড়ার মধ্যে মাখিয়ে গড়িয়ে নিয়েও ভাজতে পারেন। মুচমুচে আলুর লুচি নিশ্চিত বেশ মজা হবে খেতে।
আলুর দম
উপকরণ:
আলু ১০টি, পিয়াজ বাটা -১ চামচ, আদা+রসুন বাটা -১ চামচ, টমেটো পেস্ট -২ চামচ, , গরম মসলা -১/২ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুড়া-১/২ টেবিল চামচ, জিরা গুড়া-১/২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ৪ টি, ধনেপাতা কুচি-৩ টে চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ৩ টেবিল চামচ।
মরিচ+হলুদ গুরা-১/২ চামচ
প্রণালি:
প্রথমে আলু খোসা ছাড়িয়ে লবণ ও সামান্য হলুদ গুড়া দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার একটি কড়াইতে তেল দিয়ে সব মশলা দিয়ে কষাতে হবে। কষানো হলে আলুগুলো দিয়ে ঢেকে দিয়ে সামান্য পানি দিতে হবে। ১৫মিনিট পরে ঝোল শুকিয়ে এলে নামানোর আগে ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ দিয়ে নামিয়ে পরোটা অথবা লুচির সাথে পরিবেশন করুন।
আলুর পাকোড়া
উপকরণ : আলু আধা কেজি, বেসন আধা কাপ, চালের গুঁড়ো এক কাপের ৪ ভাগের এক ভাগ, পেঁয়াজ কুচি এক কাপের ৪ ভাগের এক ভাগ, মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা
কুচি সামান্য, হলুদ গুঁড়ো এক চা চামচের ৪ ভাগের এক ভাগ, লবণ পরিমাণমত, তেল ভাজার জন্য, পানি এক কাপের ৪ ভাগের এক ভাগ।

প্রস্তুত প্রণালী :  আলু মিহি করে ভাজির মতো কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। তেল বাদে সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে আলু কুচির সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর প্যানে তেল গরম করে আলুর মিক্সডগুলোকে পেঁয়াজুর আকারে লাল করে ভেজে নিতে হবে। সুন্দর করে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
আলুর চপ
উপকরণ : আলু আধা কেজি, ডিম ৪টি, মাংস কিমা আধা কাপ, আদা এবং রসুন পেস্ট সামান্য, পেঁয়াজ ৪টি, কাঁচামরিচ ৫-৬টি, পুদিনা পাতা ইচ্ছেমত, তেল ভাজার জন্য, লবণ পরিমাণমত, বিস্কুট গুঁড়া ৫-৬টি।
প্রস্তুত প্রণালী :  মাংস কিমা সামান্য, আদা এবং রসুন পেস্ট লবণ দিয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। আলু সিদ্ধ করে ভালোভাবে ভর্তা করে নিতে হবে। ৩টি ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ করে প্রতিটি ডিম ৪ ভাগ করে ১২ টুকরো করতে হবে। এখন আলু ভর্তার সঙ্গে মাংসের কিমা, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, পুদিনা পাতা কুচি এবং লবণ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে ১২ ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। ডিমের টুকরোগুলোকে প্রতিটি আলুর ভাগের ভেতরে ভরে লম্বা করে সেপ দিতে হবে। এবার একটি ডিম ভালোভাবে ফেটে নিতে হবে। এখন প্রতিটি চপকে ডিমের গোলায় ডুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়োয় গড়িয়ে নিতে হবে। এই চপগুলো ফ্রিজে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর প্যানে তেল গরম করে একে একে সব বাদামি করে ভাজুন এবং সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ফিঙ্গার চিপস
উপকরণ : আলু ১ কেজি (বড় সাইজ), হলুদ গুঁড়ো আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, লবণ পরিমাণমত, তেল ভাজার জন্য, বিট লবণ স্বাদ অনুযায়ী।

প্রস্তুত প্রণালী :  আলুগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে কাটার মেশিনে পাতলা পাতলা করে কেটে নিতে হবে। (বঁটি দিয়েও কাটা যেতে পারে)। কাটা আলুগুলো আবার ধুয়ে অল্প পানি, লবণ, হলুদ এবং মরিচ গুঁড়ো দিয়ে ভাপ দিয়ে নিতে হবে। এরপর আঝরিতে ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। পানি ঝরে গেলে পাতলা এবং পরিষ্কার কাপড় বিছিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। (এভাবে আলু শুকিয়ে অনেক দিন পর্যন্ত রাখা যায় এবং ইচ্ছেমত ভেজে খাওয়া যায়)। প্যানে তেল গরম করে শুকানো দিয়ে ভেজে নিতে হবে। গরম তেলে আলু দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিতে হবে। বৃষ্টির দিনে এই আলুভাজা খেতে খুবই ভালো লাগে।
আলুর পরোটা
উপকরণ : ৬ খানি পরোটার জন্য ময়দা, আলু ৪টি, ধনেপাতা এক আঁটি, লবণ পরিমাণমত, , একটু পাতিলেবুর রস।
১ চা-চামচ গুঁড়া মরিচ
প্রস্তুত প্রণালী : আলুর খোসা ছাড়িয়ে চটকে এর সঙ্গে গুঁড়া মরিচ, লবণ ও সরু করে কুচানো ধনেপাতা চটকে একটু পাতিলেবুর রস দিন। নুন ও ময়দা দিয়ে পরোটার জন্য মাখুন এবং ৬টি লেচি তৈরি করুন। প্রত্যেকটি লেচির মাঝে আলুর পুর দিয়ে বেলে ঘি বা তেলে ভেজে নিন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।
আলুর ফ্রাই
উপকরণ : আলু ৩টি (বড় সাইজ), বেসন ৩ টেবিল চামচ, কর্ন ফ্লাওয়ার বা চালের গুঁড়ো ২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো সামান্য, ধনে গুঁড়া সামান্য। মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, লবণ পরিমাণমত, তেল ভাজার জন্য, বিট লবণ স্বাদ অনুযায়ী।

প্রস্তুত প্রণালী : আলুগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে কাটার মেশিনে পাতলা পাতলা করে কেটে নিতে হবে। (বঁটি দিয়েও কাটা যেতে পারে)। এরপর আঝরিতে ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর একটি বাটিতে সব উপকরণ পানি দিয়ে ঘন করে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এবার মিশ্রণে আলুর পাতলা টুকরোগুলো একে একে ডুবিয়ে গরম তেলে ভাজতে হবে। বাদামি বর্ণ হলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। বৃষ্টির দিনে এই আলুভাজা সচ দিয়ে খেতে খুবই ভালো লাগে।
আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
উপকরণ : আলু আধা কেজি (বড় সাইজ), কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, হলুদ এবং মরিচ গুঁড়ো সামান্য, লবণ পরিমাণমত, টেস্টিং সল্ট এক চা চামচের ৪ ভাগের এক ভাগ, পানি
সামান্য।
প্রণালী : আলু ফ্রেঞ্চ আকারে কেটে নিতে হবে। সামান্য পানি দিয়ে কাটা আলুগুলোকে তাপ দিয়ে নিতে হবে। পানি ভালো করে ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর কর্নফ্লাওয়ার, হলুদ এবং মরিচ গুঁড়ো, লবণ, টেস্টিং সল্ট আলুর সঙ্গে ভালোভাবে মাখিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। প্যানে তেল গরম করে বাদামি করে ভেজে নিতে হবে। এরপর সস্ দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
দই আলু তরকারি
উপকরণ : আধা কেজি আলু, ১ চা চামচ আদা কুচি, ১ চা চামচ রসুন কুচি, ১ কাপ ঘন দই, ১ চা চামচ জিরা, ১টি শুকনো মরিচ, বীজ ফেলে নেওয়া, আধা চা চামচ হিং, ২টি কাঁচামরিচ কুচি, আধা চা চামচ মরিচ গুঁড়ো, সিকি চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ
ধনে গুঁড়ো, ১ চা চামচ মৌরি, ১ চা চামচ কালঞ্জি, অল্প কিছু কারই পাতা, বেসন ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী: আলু সেদ্ধ করে নিন। খোসা ছাড়িয়ে হাত দিয়ে অল্প করে ভেঙ্গে নিন। দই এবং বেসন একসাথে বিট করে নিন। এতে আধা কাপ পানি দিন এবং সরিয়ে রাখুন।একটি প্যানে তেল গরম করে নিন এবং এতে জিরা, হলুদ, হিং, মৌরি, কালঞ্জি দিন এবং অল্প করে ভেজে নিয়ে এতে দিন মরিচ কুচি, কারি পাতা, আদা ও রসুন। অল্প করে ভেজে নিয়ে এতে দইয়ের মিশ্রণ দিন এবং নাড়তে থাকুন।
দইয়ের সাথে সব মিশে গেলে আলুগুলো দিয়ে দিন। লবণ দিয়ে আলতো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ফুটে আসবে। ৫-৭ মিনিট ফুটতে দিন। এরপর আঁচ বন্ধ করে দিন। টাটকা ধনেপাতা কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন দই-আলুর তরকারি। ভাত অথবা পরোটার সাথে পরিবেশন করতে পারেন আলুর এই গ্রেভি।
বিকেলের নাস্তায় আলুর পাকোড়া
উপকরণ:
আলু (মাঝারি আকার) ২টি
পিঁয়াজ ১টি
কাঁচামরিচ ২টি কুচি করা
ধনেপাতা ১ টেবিল-চামচ
লাল মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ
ভাজা জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ
বেসন ৩ টেবিল-চামচ
চালের গুঁড়া ১ চা-চামচ
লবণ স্বাদমত
তেল ভাজার জন্য
পানি খুব সামান্য
প্রণালী:
প্রথমে আলুর খোসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে আলু ভাজির মতো কেটে তারপর চা-চামচ লবণ দিয়ে মাখিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। বাকি উপকরণ কেটে তৈরি করে রাখুন।
এখন পানি দিয়ে আলু ধুয়ে ভালো করে চেপে চেপে পানি ঝরিয়ে আলু ও অন্যান্য উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে অল্প অল্প আলুর মিশ্রণ নিয়ে পাকোড়ার আকার বানিয়ে তেলে ছাড়ুন। মাঝারি আঁচে বাদামি করে ভেজে তুলুন। পছন্দসই সস ও সালাদের সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আলু-করলা ভাজি
উপকরণঃ
             করলা – ১টা বড় সাইজের
             আলু – ২টা মাঝারী সাইজের
             পেয়াজ কুচি – ১ টেবিল চামচ
             ধনেগুড়া – ১টেবিল চামচ
             মরিচ গুড়া – ১/২ চা চামচ
             জিরা গুড়া – ১/৩ চা চামচ
             লবণ – স্বাদমতো
             চিনি – ১ চিমটি
             তেল – ১/২ কাপ
প্রস্তুত প্রণালীঃ

আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর আলু ও করলা ধুয়ে পাতলা করে কেটে নিতে হবে, কুচি করবেন না। করলার খোসা ছাড়াতে হবেনা। কাটার পর সবজি ধোবেন না, তাতে খাদ্যগুণ নষ্ট হয়।
এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে একটু গরম করুন। তেল হালকা গরম হলে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নেড়ে পেঁইয়াজ ভাজুন। পেঁয়াজ বাদামী রঙ ধারণ করলে একেএকে ধনে গুড়া, মরিচ গুড়া, জিরা গুড়া ও লবণ দিয়ে একবার নেড়ে তাতে করলা ও আলু দিয়ে দিন। ভালভাবে কয়েকবার নেড়ে মশলার সাথে কষিয়ে নিন। ঢাকনা দিয়ে দিতে পারেন এ পর্যায়ে। চুলার আঁচ খুব বেশি থাকবেনা। কিছুক্ষন পর আবার নেড়ে দিন। এভাবে একটু পরেপরে কয়েকবার নেড়ে দিতে হবে। নেড়ে দেয়ার সময় খেয়াল রাখবেন খুব যেন ওলোট-পালোট করে নাড়া না হয় তাতে করলা তিতা হয়ে ঊঠবে।
করলা ভাজা-ভাজা হয়ে এলে সামান্য (১ চিমটি) চিনি দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন। চিনি দেয়ার ফলে করলা ভাজির রঙ রান্নার পরো সবুজ থাকবে
আলু দিয়ে ডিমের তরকারি
উপকরনঃ
ডিম: ৪টি
আলু:২টি
পেয়াজ:১টি
টমেটো:১টি
রসুন কুচি: ১ টেবিল চামচ
জিরা গুড়া: ১ চা চামচ
হলুদ গুড়া: আধা চা চামচ
মরিচ গুড়া: ১ চা চামচ
তেল: পরিমান মতো
লবন: পরিমান মতও
এলাচ: ১টা
দারচিনি:১টা
লবঙ্গ :১টা
প্রস্তুত প্রনালীঃ
তেল গরম করে তাতে সিদ্ধ ডিম ভেজে ফেলতে হবে। এবার ওই তেলে পেয়াজ ভেজে বাদামী হলে তাতে এলাচ,দারচিনি,লবঙ্গ দিয়ে নেড়ে রসুনকুচি দিয়ে ভালকরে ভাজতে হবে।
এবার এতে একে একে টমেটও, জিরা,হ্লুদ, মরিচ,লবন দিয়ে ও আলূ দিয়ে নেড়ে পানি দিয়ে কষাতে হবে। কষানো হলে ডিম দিয়ে নেড়ে ২ কাপ পানি দিয়া ঢাকনা দিয়া দিতে হবে।
এবার পানি শুকালে মাখামাখা হলে নামিয়ে ধনে পাতা দিয়া গারনিশ করতে হবে।
চাইলে ধনেপাতাও দেওয়া যাবে স্বাদ বৃদ্ধি করতে চাইলে।
সবজি রান্নাআলু ,বেগুন, টমেটোর তরকারি
যা যা লাগবে
আলু – বড় ২টি
বেগুন -বড় ১টি
টমেটো – বড় ২টি
হলুদ, মরিচ ও জিরা গুড়া – ১ চা চামচ করে
আদা বাটা -১ /২ চা চামচ
পেঁয়াজ কুচি- ১/৪ কাপ
তেল -১ /৪ কাপ
গোটা কালোজিরা -১ চা চামচ
গোটা শুকনো মরিচ – ৪-৫টি
চিনি – সামান্য
লবণ -স্বাদ মতো
যেভাবে রান্না করবেন
সবজি গুলো পছন্দ মতো কেটে ধুয়ে নিন। কড়াই এ অর্ধেক তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি ভেজে মশল্লা কষিয়ে আলু দিয়ে ঢেকে দিন। আলু সেদ্ধ হলে বেগুন ও টমেটো দিয়ে আবার ঢেকে দিন। প্রয়োজন হলে পানি দিতে পারেন। বেগুন ও টমেটো সেদ্ধ হলে চিনি দিয়ে নামিয়ে রাখুন।

অন্য একটি কড়াই এ বাকি তেল গরম করে গোটা শুকনো মরিচ ও কালো জিরা ফোড়ন দিয়ে তরকারিতে ঢেলে ঢেকে দিন। সুন্দর একটা গন্ধ বেরোবে। যারা ঘি পছন্দ করেন ফোড়নটা ঘি দিয়ে দিবেন আরো মজা হবে।


No comments:

Post a Comment