মূলা / Radish
মূলা (Raphanus raphanistrum subsp. sativus)
একটি মূলবিশেষ খাবার উপযোগী সবজী, রোমানদের আগে ইউরোপে ব্রাসিকাসি পরিবারের একটি ঘরোয়া
খাবার ছিল মূলা।
সারা বিশ্বেই মূলা জন্মায় এবং খাওয়া হয়, বেশীরভাগ সময় এটি কাঁচা কচকচে সালাদ সবজী হিসাবে
খাওয়া হয়। মূলা অনেক বৈচিত্রময়, আকারে আলাদা,গন্ধযুক্ত, বিভিন্ন রং এবং
পরিপক্ক হওয়ার সময়ের বিভিন্নতা রয়েছে। মূলা গাছ দ্বারা বিভিন্ন মিশ্রিত
রাসায়নিক নির্গত হওয়ার কারনে এটি তিব্র গন্ধযুক্ত হয়, যার সাথে যুক্ত থাকে গ্লূকোসাইনোলেট, মাইরোসিনাস এবং ইসোথিওসায়ানেট। মূলা কখনও কখনও
অন্যান্য সবজীর সাথে সহচর সবজী হিসাবে জন্মায়, এবং কিছু কিটপতঙ্গ ও
রোগে ভোগে। তারা অঙ্কুরিত হয় দ্রুত এবং বড় হয় দ্রুততার
সাথে, ছোট জাতের মূলা খাওয়ার উপযোগী হয় এক মাসের
মধ্যে, যেখানে বড় জাতের মূলা সময় নেয় কয়েক মাস। মূলা
সাধারণত ঘাটতি পূরণের শীতকালীন সবজী হিসাবে বাজারে ব্যাবহৃত হয়, ঠিক যেমন অবহেলীত সবজী। কিছু মূলা তাদের বীজ থেকে
জন্ম নেয়। উদাহরন স্বরূপ সম্ভবত কিছু তেল উৎপাদনের জন্য ব্যাবহৃত হয়। কিছু ব্যাবহৃত হয় বীজ তৈরীতে এবং মূলা ও মূলার
পাতা উভয়েই মাঝে মাঝে ঠান্ডা খাবার হিসাবে রান্না করা হয়।
Radishes,
raw
প্রতি
১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান
শক্তি ৬৬ কিজু (১৬ kcal)
শর্করা 3.4 g
চিনি 1.86 g
খাদ্যে
ফাইবার 1.6 g
স্নেহ
পদার্থ 0.1 g
প্রোটিন 0.68 g
ভিটামিনসমূহ
থায়ামিন
(বি১) (1%) 0.012 mg
রিবোফ্লাভিন
(বি২) (3%) 0.039 mg
ন্যায়েসেন
(বি৪) (2%) 0.254 mg
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি৫)(3%) 0.165 mg
ভিটামিন
বি৬
(5%) 0.071 mg
ফোলেট
(বি৯) (6%) 25
μg
ভিটামিন
সি (18%) 14.8 mg
চিহ্ন
ধাতুসমুহ
ক্যালসিয়াম (3%) 25 mg
লোহা (3%) 0.34 mg
ম্যাগনেসিয়াম (3%) 10 mg
ম্যাঙ্গানিজ (3%) 0.069 mg
ফসফরাস (3%) 20 mg
পটাশিয়াম (5%) 233 mg
দস্তা (3%) 0.28 mg
অন্যান্য
উপাদানসমূহ
Fluoride 6 µg
মুলার নানা উপকারের
কথা জেনে নিন
যকৃৎ ও পাকস্থলী বিষমুক্ত করতে পারে মুলা। মুলা সাদা, লাল বা কালো রঙের হতে পারে। শীতকালে সাদা মুলা সহজে চোখে পড়ে। এ মুলায় প্রচুর ভিটামিন সি আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। কালো রঙের মুলা ও এর পাতা অনেক দিন ধরে জন্ডিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মুলায় যে উপাদান আছে, তা রক্ত শোধনে সহায়তা করে। মুলায় আছে প্রচুর সালফার।
যকৃৎ ও পাকস্থলী বিষমুক্ত করতে পারে মুলা। মুলা সাদা, লাল বা কালো রঙের হতে পারে। শীতকালে সাদা মুলা সহজে চোখে পড়ে। এ মুলায় প্রচুর ভিটামিন সি আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। কালো রঙের মুলা ও এর পাতা অনেক দিন ধরে জন্ডিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মুলায় যে উপাদান আছে, তা রক্ত শোধনে সহায়তা করে। মুলায় আছে প্রচুর সালফার।
১. রক্তে অক্সিজেন বাড়ায়: রক্তের লোহিত কণিকা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে
মুলা। মুলা খেলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে।
২. যকৃৎ সুরক্ষা করে: মুলায় প্রচুর ফাইবার আছে। প্রতিদিন যদি সালাদের
সঙ্গে অল্প পরিমাণে মুলা খাওয়া যায়, তবে শরীরে ফাইবার
আসায় হজম ভালো হয়। এটি পিত্ত উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে, যকৃৎ ও গল ব্লাডারকে রক্ষা করে। শরীরে পানি
ধারণক্ষমতার বাড়াতে মুলা খাওয়া যেতে পারে।
৩. হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষায়: হৃদ্যন্ত্র সুরক্ষা করতে পারে মুলা। এতে আছে
অ্যান্থোসায়ানিনস, যা হৃদ্যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
তাই বেশি মুলা খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। এটি ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড ও ফ্লাভোনয়েডসের ভালো উৎস।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: মুলায় আছে পটাশিয়াম, যা শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাঁরা মুলা খেতে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়, রক্ত শীতলকারী প্রভাব আছে মুলায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় সাধারণ সর্দিকাশি থেকে
সুরক্ষা দেয় এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত মুলা খেলে শরীরে ক্ষতিকর
মুক্ত উপাদান তৈরি হয় না। এ ছাড়া প্রদাহ ও অকালবার্ধক্য দূর হয়।
৬. রক্তনালি শক্তিশালী করে: কোলাজেন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মুলা, যা রক্তনালিকে শক্তিশালী করে এবং অথেরোসক্লেরোসিস
নামের ধমনির রোগ হতে বাধা দেয়।
৭. বিপাকের বন্ধু: শুধু পাচনতন্ত্রই নয়, এটি বিপাকেরও ভালো বন্ধু। অম্ল, স্থূলতা, গ্যাসট্রিক, মাথাব্যথা, বমিভাব দূর করে
মুলা।
৮. উচ্চ পুষ্টিগুণ: লাল মুলায় ভিটামিন ই, এ, সি, বি৬ ও কে আছে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও ভরপুর। এতে
আছে ফাইবার, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাংগানিজ। এসব উপাদান আমাদের শরীরকে
কর্মঠ রাখতে সাহায্য করে।
৯. ত্বকের জন্য ভালো: প্রতিদিন মুলার জুস খেলে ত্বক সতেজ থাকে। মুলায়
থাকা ভিটামিন সি, জিংক ও ফসফরাস এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। ত্বকের
শুষ্কতা, ব্রণ বা দাগ দূর করতে পারে। মুলার পেস্ট তৈরি করে
মুখে মাখলে ত্বক সজীব থাকে। এ ছাড়া চুলের খুশকি দূর করতে, চুল পড়া বন্ধ করতে, চুলের
গোড়া শক্ত করতে পারে মুলা।
১০. শরীর আর্দ্র রাখে: মুলায় জলীয় পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরকে আর্দ্র
রাখে।
মূলা ভাজি
উপাধান
মূলা কুচি-২টি
পেয়াজ কুচি-৩টা
রসুন কুচি-১টে: চামচ
ডিম-২টি
চিকন করে ফালি করা কাঁচামরিচ-৪টি
হলুদ-১/৪চামচ
মূলা কুচি-২টি
পেয়াজ কুচি-৩টা
রসুন কুচি-১টে: চামচ
ডিম-২টি
চিকন করে ফালি করা কাঁচামরিচ-৪টি
হলুদ-১/৪চামচ
লবন -সাদ মত
জিরা গুড়া -১/৪চামচ
ধনেপাতা কুচি
তেল-৩টে: চামচ।
প্রনালী :
প্যানে তেল গরম করুন
মাঝারি আচে। রসুন কুচি দিয়ে অল্প ভাজা হলে পেয়াজ কুচি দিন। পেয়াজ বাদামি রং এর হলে
হলুদ,জিরা দিয়া মিশিয়ে নিন। কাচামরিচ দিয়ে, ডিম ফেটিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন যেনো ডিম জমাট না
বাধে। এবার মূলা কুচি,লবন দিয়ে ভালো করে
নেড়ে মিশিয়ে নিন। কষিয়ে মুলায় ১/৪কাপ পানি দিন। আমি দেই নাই আমি অনেক পাতলা কুচি
করেছিলাম। মূলায় পানি ও ছিল।আপনারা যদি মূলা কুচির আগে ধুয়ে নেন তবে পানি লাগবে।
অল্প আচে ডেকে রেখে দিন। কিছুক্ষন পর পর নেড়ে দিন। গলে গেলে ধনে পাতা
দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার মূলা ভাজি।
কাতল মাছ ও মূলা
বেগুনের ঝোল
উপকরণঃ
১. কাতল মাছ –
মাথাসহ ৬ টুকরা
২. মূ্লা – মাঝারী
সাইজের ১টির মাঝের অংশ
৩. বেগুন – মাঝারী ১
টি
৪. আলু – মাঝারী ১
টি
৫. পেঁয়াজ কুচি –
হাফ কাপ
৬. আদা বাটা – ২ চা
চামচ
৭. রসুন বাটা – ২ চা
চামচ
৮. ধণে গুড়া – ২ চা
চামচ
৯. জিরে গুড়া – ২ চা
চামচ
১০. হলুদ – ২ চা
চামচ
১১. মরিচ – ২ চা চামচ
১২. লবণ – স্বাদ মতো
১৩. সয়াবীণ তেল –
হাফ কাপ
১৪. গোটা জিরা – হাফ
কাপ
কাতল মাছ ও মূলা
বেগুনের ঝোল | প্রনালীঃ
১. কাতল মাছের টুকরা
গুলো ভালো করে ধুয়ে নিন
২. মূ্লা ও বেগুন
চাকা করে মাঝে ১ টা ফাক দিয়ে কেটে নিন
৩. বেগুন ৬ ফালি করে
কেটে নিন
৪. সব মশলায় সামান্য
পানি দিয়ে ১ টা পেস্ট তৈরী করুন
৫. কড়াইয়ে তেল দিন
৬. তেল গরম হলে
পেঁয়াজ কুচি দিন
৭. পেঁয়াজ বাদামী
হলে গোটা জিরা দিন
৮. জিরা ফুটতে থাকলে
মশলার পেস্টটা দিন
৯. ২-৩ মিনিট কষিয়ে
মাছ গুলো দিন
১০. মাছ মাখা মাখা
হলে ১ কাপ পানি দিন
১১. মাঝে মাঝে ঝুকিয়ে
দিন
১২. মাঝারী আচে ১৫
মিনিট কষিয়ে মাছ গুলো উঠিয়ে রখুন
১৩. এবার ঐ ঝোলের
মধ্যে মূ্লা,বেগুন ও আলু দিন
১৪. মাঝারী আঁচে
২০-২৫ মিনিট কষাণ
১৫. মাঝে মাঝে অল্প
অল্প করে পানি দিয়ে কষাণ
১৬. সিদ্ধ হয়ে এলে ১
কাপ পানি দিন
১৭. ঝোল ফুটলে মাছ
গুলো দিয়ে দিন
১৮. আরও ১০ মিনিট
রান্না করুন
১৯. ঝোল গরম হলে এলে
নামিয়ে পরিবেশণ করুন কাতল মাছ ও মূলা বেগুনের ঝোল
মুলার ডালনা
উপকরণ: মুলা কুচি ২
কাপ,
কাঁচা মুগডাল আধা কাপ,
কাঁচা মুগডাল আধা কাপ,
মসুর ডাল আধা কাপ,
আদাবাটা আধা চা-চামচ,
রসুনবাটা আধা চামচ,
হলুদ গুঁড়া সিকি চা-চামচ,
লবণ স্বাদমতো,
তেজপাতা ১টি,
টমেটো ২টি।
প্রণালি: মুগ ও মসুর ডাল ধুয়ে টমেটো ও মুলা বাদে সব উপকরণ মিশিয়ে তিন কাপ আন্দাজ পানি দিয়ে মাঝারি জ্বালে রান্না করতে হবে। ডাল আধা সেদ্ধ হলে মুলা দিয়ে রান্না করতে হবে। মুলা সেদ্ধ হলে টমেটো দিতে হবে। ঝোল কমে এলে বাগার দিতে হবে।
বাগারের উপকরণ: পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ,
কাঁচা মরিচ ফালি ২-৩টা,
তেল ৩ টেবিল চামচ,
কুচো চিংড়ি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: তেল গরম করে রসুন ও পেঁয়াজ ভেজে চিংড়ি দিয়ে ভাজা ভাজা হলে কাঁচা মরিচ দিয়ে মুলা ডাল ঢেলে দিতে হবে।
ফলি মাছ, কাঁচা টমেটো ও কচি
মুলার ঝোল
উপকরণ:
- ফলি মাছ – ১/২ কেজি
- ডাটা সহ কচি মুলা – ২৫০গ্রাম (চির করে কাটা)
- কাঁচা টমেটো – ২৫০ গ্রাম
- পিঁয়াজ বাটা – ৩ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ
- জিরা বাটা – ১/২ চা চামচ
- আদা বাটা – ১/৩ চা চামচ
- হলুদ গুড়া – ১/৩ চা চামচ
- মরিচ গুড়া – ১ চা চামচ
- লবণ ও তেল পরিমাণ মত
পদ্ধতি:
- পাত্রে মসলা কষিয়ে আগে থেকে পরিষ্কার করে
রাখা মাছ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
- মসলা ছাড়া কষানো মাছ একটি পাত্রে তুলে রেখে
সেই মসলায় আগে থেকে কেটে পরিষ্কার করে রাখা মুলা ও কাঁচা টমেটো দিয়ে
কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন।
- এবার তাতে মাছ ও পরিমাণ মত পানি দিয়ে ঢেকে
রান্না করুন (মাছ দেবার পর আর নাড়বেন না)।
- পছন্দ মাফিক ঝোল রেখে নামিয়ে নিন।
No comments:
Post a Comment