Friday, November 24, 2017

চাপিলা/গণি চাপিলা/Gudusia
chapra
চাপিলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Gonialosa) Clupeidae পরিবারের একটি গণের নাম একটি ছোট চ্যাপ্টা মাছ। দেখতে অনেকটা ইলিশ মাছের মতো। এই মাছ বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান এ পাওয়া যায়।এটি Gudusia chapra প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। সুস্বাদু এবং সহজলভ্যতার কারণে চাপিলা অতি জনপ্রিয়। এ ছাড়া এ মাছে থাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমিষ, , ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ফসফরাস।
ভিটামিন
চাপিলার দেহ রুপালি রঙের, ঘাড়ের দিকটা ধূসর এবং পৃষ্ঠভাগ কিছুটা কালচে। দৈর্ঘ্যে এ মাছ ২০ সেমি পর্যন্ত হতে পারে। এদের মুখ প্রশস্ত, দাঁত নেই। লেজ লম্বা, দ্বিধাবিভক্ত। উদরের অঙ্কীয়ভাগ সরু এবং খাঁজকাটা। পৃষ্ঠীয় ও শ্রোণী পাখনা খাটো, পায়ু পাখনা লম্বা।
এ মাছ পানির উপরিভাগ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। প্লাঙ্কটন এদের প্রধান খাদ্য। বাংলাদেশের সর্বত্রই নদী, নালা, খাল, বিল, পুকুর এবং অন্যান্য স্বাদুপানির জলাশয়ে এদের বাস।  হ্রদ, পুকুর এমনকি ক্ষুদ্র পুকুরের (mini ponds) মতো আবদ্ধ জলাশয়েও এদের চাষ করা যায়। চাপিলার বছরে দু’বার প্রজনন হয়, জুন-জুলাই এদের প্রধান প্রজনন মৌসুম।
সারা বিশ্বে সহজপাচ্য উন্নতমানের প্রাণিজ আমিষ হিসাবে মাছের অবস্থান সর্বাগ্রে। ছোট
মাছে প্রচুর পরিমাণ আমিষ এবং মানব দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ১০টি Amino acid আছে। মাছের আমিষ রক্তে কলেস্টারোলের মাত্রা কমায়। মাছের দেহের ওমেগা-৩ Fatty acid রক্তের অনুচক্রিকাকে জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয় এবং ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। মাছের তেল কিডনীতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়। মাছে কম-বেশি ৭২% পানি, ১৯% আমিষ, ৮% চর্বি, ০.১৫% ক্যালসিয়াম, ০.২৫% ফসফরাস এবং ০.১০%Vitamin-A, B, C, D আছে। অনেকক্ষেত্রে বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছের
পুষ্টিমান বেশি হয়ে থাকে। ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম
, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মত খনিজ পদার্থ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করে। ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড় গঠনে সহায়ক। ফসফরাস নতুন কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে থাকে। লাইসিন ও সালফার সমৃদ্ধ অত্যাবশ্যকীয় Amino acid ছোট মাছে বেশি পরিমাণে থাকে। অন্ধত্ব, গলগন্ড ও রক্তশূন্যতা দূরীকরণে ছোট মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে Amino acid থাকে, যা শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধ মানুষের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিসহ রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ছাড়া গর্ভবতী মহিলা ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষায় ছোট মাছ বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখে। গর্ববতী মহিলাদের ছোট মাছ খাওয়ালে বাচ্চার মস্তিষ্ক, ত্বক, চোখের গঠন এবং হাড় ও দাঁতের গঠন সঠিক ও স্বাভাবিক হয়।
আমাদের দেশে সাধারণতঃ যেভাবে মাছ কাটা ও ধোয়া হয় তাতে মাছে বিদ্যমান অনেক
পুষ্টি ধুয়ে চলে যায়। মাছের দেহের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে,  মাছে বিদ্যমান মোট Vitamin-A এর পরিমাণ চোখের অংশে সবচেয়ে বেশি (৫৩%), পেটের অংশে ৩৯%, শরীরের সামনের অংশে ৭% এবং লেজের অংশে ১% থাকে। মাছ কাটার সময় মাথা কেটে ফেলে দিলে মাছে বিদ্যমান ভিটামিনের বেশির ভাগই ফেলে দেয়া হয়। সেজন্য মাছ কাটার সময় বা ধোয়ার সময় এসব বিষয়ে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
১. মাছ থেকে যে ক্যালরি পাওয়া যায়, তা ক্ষতিকর চর্বিমুক্ত। মাছের ক্যালরি নির্ভর করে চর্বির মাত্রার ওপর। ডিম পাড়ার সময় হলে মাছের দেহে তেলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন ক্যালরির মাত্রাও বাড়ে। পুষ্টিচাহিদা মেটাতে মাছ তাই খুবই কার্যকর।
২. মাছে পর্যাপ্ত আমিষ আছে। মাংস থেকে আমিষ পেতে হলে এর সঙ্গে ক্ষতিকর চর্বি বা সম্পৃক্ত চর্বিও গ্রহণ করতে হয়। মাছের ক্ষেত্রে এ সমস্যা নেই, বিশেষ করে শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য আমিষের চাহিদা পূরণে প্রতিদিন মাছ বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
৩. মাছের তেলে এ ছাড়াও রয়েছে প্রস্টাগ্লানডিন নামের রাসায়নিক উপাদান, যা ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
৪. বুদ্ধির বিকাশ, স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ডিএইচএ চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে। যে মায়েরা মাছ খান নিয়মিত, তাঁদের বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুরা ডিএইচএ পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে পারে। ছয় থেকে দশ বছর বয়সী শিশুরা পর্যাপ্ত ওমেগা ৩ এবং ডিএইচএ গ্রহণ করলে পরবর্তী জীবনে মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি ও মেধার পরিচয় দেয়। এটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

৫. আমিষ ও ওমেগা ৩ চর্বি ছাড়াও মাছে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান, যেমন: সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস ইত্যাদি, যা বিপাক ক্রিয়া, দাঁত, পেশি ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। ছোট কাঁটাযুক্ত মাছ ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
৬. মাছে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা ক্যানসার, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ যেমন: বাত, আর্থ্রাইটিস রোধে সাহায্য করে, ত্বক ভালো রাখে। l প্রধান পুষ্টিবিদ, বারডেম হাসপাতাল|
মস্তিষ্ক
বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য আমিষের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে|
হৃদ্যন্ত্র
তেলযুক্ত মাছ খেলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা এক-তৃতীয়াংশ কমে আসে|
ক্যানসার
ক্যানসার, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ যেমন: বাত, আর্থ্রাইটিস রোধে সাহায্য করে, ত্বক ভালো রাখে|
পেশি ও হাড়
বিপাক ক্রিয়া, দাঁত, পেশি ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। ছোট কাঁটাযুক্ত মাছ ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস|
মেথি ফোড়নে চাপিলা
উপকরণ:
চাপিলা মাছ ২০০গ্রাম,

নুন স্বাদমতো,
সর্ষেরতেল পরিমাণমতো,
হলুদ প্রয়োজনমতো,
কাঁচালঙ্কা ৬টা,
জিরেগুঁড়ো ২চামচ,
মেথি ১চামচ।
প্রণালী:
মাছ ধুয়ে নুন,হলুদ মাখিয়ে রাখুন।তারপর কড়াইতে তেল দিন।তেল গরম হলে মাছগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখুন।কড়াইয়ে আবার তেল দিন।তারপর মেথি ও কাঁচালঙ্কা ফোড়ন দিন।সামান্য জল দিন।এরপর নুন,হলুদ,জিরেগুঁড়ো দিয়ে নেড়েচেড়ে ভাজা মাছগুলো দিয়ে দিন।সামান্য জল দিয়ে ঢেকে দিন।ফুটে উঠলে চেরা কাঁচালঙ্কা দিয়ে নামিয়ে নিন।তারপর গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
সর্ষে বাটায় চাপিলা
যা লাগবে : চাপিলা মাছ ২৫০ গ্রাম, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, ধনে, জিরা, হলুদ ও মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ করে, সরিষার তেল আধা কাপ, কাঁচামরিচ ফালি ৫টি, লবণ ও পানি পরিমাণ মতো।
যেভাবে করবেন : মাছ কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াইয়ে পেঁয়াজ কুচির সঙ্গে কাঁচামরিচ বাদে সব মশলা হাতে মেখে নিন। এবার মাছ দিয়ে আলতোভাবে মেখে ১ কাপ পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করুন। পানি শুকিয়ে তেল উপরে উঠলে কাঁচামরিচ দিয়ে ২/১ মিনিট রান্না করে নামিয়ে নিন।
চাপিলা মাছ ও ডাটার ঝোল
উপকরণ:
•    চাপিলা মাছ – ৪০০ গ্রাম (আস্ত)
•    ডাটা – ১/২ কেজি (লম্বা করে কাটা)
•    পিঁয়াজ বাটা – ৩টেবিল চামচ
•    রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ

•    আদা বাটা – ১/৩ চা চামচ
•    জিরা বাটা – ১/৩ চা চামচ
•    হলুদ গুড়া – ১/৩ চা চামচ
•    মরিচ গুড়া – ১ চা চামচ
•    লবণ ও তেল পরিমাণ মত
পদ্ধতি:
•    রান্নার পাত্রে মাছসহ সব উপকরণ এক সাথে মাখিয়ে নিন।
•    এবার পরিমাণ মত পানি যোগ করুন।
•    ঢেকে রান্না করুন।
•    দু-একবার ডলক দিন।
•    পছন্দ মাফিক ঝোল রেখে নামিয়ে নিন।


Wednesday, November 22, 2017

মটরশুঁটি/Green Pea
মটর শাক/Motor Shak

মটরশুঁটি হলো লেগিউম জাতীয় উদ্ভিদ Pisum sativum এর গোলাকার বীজ। প্রতিটি মটরশুঁটির মধ্যে বেশ কয়েকটি বীজ থাকে। যদিও এটি এক প্রকারের ফল, এটি মূলত সবজি হিসাবে রান্নায় ব্যবহৃত হয়।
P. sativum একটি একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শীত মৌসুমে চাষ করা হয়ে থাকে। গড়ে প্রতিটি মটরশুঁটির ওজন ০.১ হতে ০.৩৬ গ্রাম। মটরশুটির বীজকে সবজি হিসাবে তাজা, জমাটবাঁধা, অথবা ক্যানে ভর্তি করে পরে রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
বুনো মটরশুঁটি মধ্যপ্রাচ্য এবং নিকটপ্রাচ্যে খাওয়া হয়।
প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসারে নিওলিথিক যুগের সিরিয়া, তুরস্ক, এবং জর্ডান এ মটরশুঁটির খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রাচীন মিশরের নীল নদের ব-দ্বীপ এলাকায় প্রায় ৪৮০০-৪৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এবং উচ্চ মিশরে ৩৮০০-৩৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এর ব্যবহারের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। জর্জিয়াতে খ্রিস্টপূর্ব ৫ম সহস্রাব্দের দিকে এর ব্যবহার হতো। এসব এলাকার পূর্ব দিকে মটরশুঁটির ব্যবহার অনেক পরে শুরু হয়েছে। আফগানিস্তানে মটরশুঁটির নজীর পাওয়া যায় ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ। পাকিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম ভারতবর্ষের হরপ্পা এলাকায় ২২৫০-১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে মটরশুঁটির চাষ হতো। গাঙ্গেয় অববাহিকা এবং দক্ষিণ ভারতে খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দ নাগাদ মটরশুঁটির চাষ শুরু হয়।

মটরশুঁটি (কাচা অবস্থায়)
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান
শক্তি  ৩৩৯ কিজু (৮১ kcal)
শর্করা                                   14.5 g

চিনি                                     5.7 g
খাদ্যে ফাইবার    5.1 g
স্নেহ পদার্থ                     0.4 g
প্রোটিন                            5.4 g
ভিটামিনসমূহ
ভিটামিন এ সমতুল্য    (5%) 38 μg
বেটা ক্যারোটিন          (4%) 449 μg
থায়ামিন (বি১)  (26%) 0.3 mg
রিবোফ্লাভিন (বি২)    (8%) 0.1 mg
ন্যায়েসেন (বি৪)  (14%) 2.1 mg
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) (2%) 0.1 mg
ভিটামিন বি৬    (15%) 0.2 mg
ফোলেট (বি৯)   (16%) 65 μg
ভিটামিন সি          (48%) 40.0 mg
চিহ্ন ধাতুসমুহ

ক্যালসিয়াম  (3%) 25.0 mg
লোহা (12%) 1.5 mg
ম্যাগনেসিয়াম (9%) 33.0 mg
ফসফরাস   (15%) 108 mg
পটাশিয়াম  (5%) 244 mg
দস্তা               (13%) 1.2 mg
একক
μg = মাইক্রোগ্রামসমূহ  • mg = মিলিগ্রামসমূহ
IU = আন্তর্জাতিক এককসমূহ
Percentages are roughly approximated using US recommendations for adults.
Source: USDA Nutrient Database
সুস্বাদু মটরশুঁটি পুষ্টির শক্তিঘর হিসেবেই পরিচিত। পোলাওয়ের সাথে, নুডলসের সাথে, সিদ্ধ করে ইত্যাদি নানা ভাবেই খাওয়া হয় মটরশুঁটি। সহজলভ্য ও জিভে জল আনা এই সবজিটির ক্যালোরির পরিমাণ খুব থাকলেও পুষ্টিতে ভরপুর থাকে। মটরশুঁটিতে ভিটামিন
ও মিনারেল থাকার পাশাপাশি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, লুটেইন এবং জেনান্থিন ও থাকে। মটরশুঁটির স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে জেনে নিই চলুন।
১। ওজন কমতে সাহায্য করে:
মটরশুঁটি ফাইবারে পরিপূর্ণ হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকতে সাহায্য করে। ফলে অস্বাস্থ্যকর ¯œ্যাক্স খাওয়া থেকেও বিরত থাকা যায়। তাছাড়া এর ক্যালোরির পরিমাণও কম থাকে। এক কাপ মটরশুঁটিতে আনুমানিক ১১৮ ক্যালোরি থাকে।
২। হৃদপিন্ডের জন্য ভালো:
মটরশুঁটিতে নিয়াসিন থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মটরশুঁটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্তনালীতে ব্লক হওয়া প্রতিরোধ করে। মটরের সুপ ব্লাডপ্রেশার কমাতে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে:

আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তাহলে পেট পরিষ্কারের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিৎ। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত হতে ফাইবার সমৃদ্ধ মটরশুঁটি খেতে পারেন। এছাড়াও মটরশুঁটি বিপাকের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
৪। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়:
মটরশুঁটিতে ভিটামিন কে থাকে যা ক্যালসিয়ামের শোষণে সাহায্য করে, ফলে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। ১ কাপ সিদ্ধ মটরশুঁটিতে দৈনিক ভিটামিন কে এর চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হয়। এছাড়াও মটরশুঁটিতে ভিটামিন বি ১ ও ফলিক এসিড ও থাকে যা অষ্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৫। বয়সের লক্ষণ প্রতিরোধ করে:
বাতাসের সং¯পর্শে ধাতুতে যেমন মরিচা পড়ে তেমনি আমাদের শরীর ও ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মটরশুঁটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতি কমায় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এ কারণেই বেশি বেশি মটরশুঁটি খাওয়া ভালো যাতে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি ধীর গতির হয়।
৬। ডিপ্রেশন কমতে সাহায্য করে:
এফেক্টিভ ডিজঅর্ডার নামক জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ফলেট নামক ভিটামিন কম মাত্রায় গ্রহণের ফলে বিষাদগ্রস্থতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ডিপ্রেশনে যারা ভোগেন তাদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। মেজাজের উন্নতি ঘটাতে সিদ্ধ মটরশুঁটি খেতে পারেন।
৭। পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:

মটরশুঁটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে বলে আপনাকে স্বাস্থ্যবান রাখতে ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর কারণ মটরশুঁটিতে কোমেস্ট্রোল নামক পলিফেনলিক যৌগ থাকে যা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্কিত।
এছাড়াও মটরশুঁটিতে ভালো মানের ভিটামিন সি থাকে বলে ইমিউনিটির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। মটরশুঁটি আয়রনে পরিপূর্ণ থাকে বলে অ্যানেমিয়া ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। প্রোটিন, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ হওয়ায় শিশুর দেহের বৃদ্ধিতেও চমৎকার ভাবে সাহায্য করে মটরশুঁটি। আলঝেইমার্স, ব্রংকাইটিস ও ক্যান্ডিডা প্রতিরোধেও সাহায্য করে মটরশুঁটি। ভিটামিন এ থাকে মটরশুঁটিতে যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
মটর শাক ভাজি
উপকরণঃ
১. মটর শাক – হাফ কেজি
২. পেঁয়াজ কুচি – হাফ কাপ
৩. কাঁচা মরিচ চেরা – ৬ টি
৪. রসুন কুচি – ১ টে. চামচ
৫. সয়াবীণ তেল – হাফ কাপ
৬. শুকনা মরিচ ভাজা – ২ টি
৭. লবণ – স্বাদমতো
প্রণালীঃ
১. মটর শাক ভালো করে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিন
২. এবার শাক গুলো পানি ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন
৩. নুডলস্ ছাকনীতে করে পানি ঝড়িয়ে নিন
৪. কড়াইয়ে তেল দিন; তেল গরম হলে রসুন কুচি দিন
৫. রসুন বাদামী হলে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ দিন
৬. পেঁয়াজ বাদামী হলে পানি ঝড়ানো কলমী শাক ও লবণ দিয়ে ভাজুন
৭. শুকনা মরিচ হাত দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দিন
৮. লাল লাল করে ভেজে তুলে পরিবেশন করুন

টাকি মাছ দিয়ে মটরশাক ভাজি
উপকরণ
মটরশাক ২ আঁটি (শাক বাছার সময় শুধু আগার দিকের নরম পাতা নেবেন। নয়তো ভাজি খরখরে আর বিস্বাদ হবে)। বড় টাকি মাছ ৪টি। মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ১টি কুচি করা। রসুন ৩ কোয়া, কুচি করা। হলুদ সামান্য। কাঁচামরিচ ৭-৮টি (পছন্দ
অনুযায়ী কম বেশি দিতে পারেন)। লবণ স্বাদমতো। তেল পরিমাণমতো।
পদ্ধতি
শাক বেছে নিয়ে মিহিকুচি করে কেটে ধুয়ে রাখুন। টাকি মাছের আঁশ ছাড়িয়ে পেটের ময়লা সাফ করে ধুয়ে লবণ ও হলুদ মাখিয়ে তেলে হালকা করে ভেজে তুলতে হবে। মাছ টুকরা করবেন না।
মাছ ঠাণ্ডা হলে ভালো করে কাটা বেছে, হাত দিয়ে ভেঙ্গে ঝুরিঝুরি করে নিন।
প্যানে বা কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজকুচি ও রসুনকুচি দিয়ে বাদামি রং করে ভাজুন।
তারপর কাটা ছাড়ানো টাকি মাছ আর সামান্য একটু হলুদ দিয়ে ভাজা ভাজা করে তিনভাগের দুইভাগ মাছ তুলে রাখতে হবে আর বাকিটার মধ্যে কুচানো শাক দিয়ে দিতে হবে।
সঙ্গে লবণ আর কাঁচামরিচ দিন।
যারা ঝাল খেতে পারেন না, তারা মরিচ আরও পরে দিতে পারেন।
শাক ভাজতে থাকুন মাঝারি আঁচে। কারণ এই শাক সিদ্ধ হতে একটু সময় নেয়।
প্রায় হয়ে এলে বাকি ভাজা মাছ দিয়ে ভালো করে মেশান। হাল্কা ভেজা ভেজা থাকতেই নামিয়ে নিন।
মনে রাখবেন, এই শাক একদম ঝরঝরে করে ভাজি করলে খেতে ভালোলাগে না আর মাছের পরিমাণ কম হলেও ভালোলাগে না।
শোল মটরের ঝোল
উপকরণ : শোল মাছ ৮-১০ টুকরা, মটরশুঁটি আধা কাপ, টমেটো ৪-৫ টুকরা (৩টি), আলু ছোট টুকরা করে কাটা ১ কাপ, তেল কোয়ার্টার কাপ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি কোয়ার্টার কাপ, কাঁচামরিচ ফালি করে কাটা ৪-৫টি, ধনেপাতা কুচি প্রয়োজন মতো, লবণ স্বাদ অনুযায়ী।
প্রস্তুত প্রণালি : প্যানে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি ও আলু ভেজে নিতে হবে। এতে সামান্য পানি দিয়ে গুঁড়া মসলা মিশিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। শাক ও টমেটো যোগ করুন। ভালো মতো কষানো হলে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ঝোল তৈরি করুন। পানি ফুটে উঠলে মটরশুঁটি ও কাঁচামরিচ দিয়ে মৃদু আঁচে চুলায় রাখতে হবে। হয়ে এলে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
মটরশুঁটির চটপটি

উপকরণ : মটরশুঁটি ২ কাপ, আলু টুকরা করে কাটা ১ কাপ, ভাজা ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, তেঁতুলের মাড় আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, ধনে পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, চিনি সামান্য, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : আলু ও মটরশুঁটি সিদ্ধ করে সব মসলা মেশাতে হবে। পরিমাণমতো পানিতে দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। ফুটে উঠলে তেঁতুল মাড় ও চিনি দিয়ে নামাতে হবে। পাত্রে ঢেলে পেঁয়াজ কুচি, মরিচ কুচি ও ধনে পাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
মটরশুঁটির সন্দেশ
উপকরণ : মটরশুঁটি সিদ্ধ করে বাটা ২ কাপ, ছানা ১ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ১ কাপ, , চিনি আধা কাপ, কিশমিশ ১ টেবিল চামচ, ভাজা কাজু বাদাম গুঁড়া আধা কাপ, এলাচ গুঁড়া আধা চা চামচ, ঘি ১ কাপ, জাফরান ভেজানো পানি ১ টেবিল চামচ।
ক্ষীরসা আধা কাপ
প্রস্তুত প্রণালি : প্যানে ঘি গরম করে মটরশুঁটি বাটা, এলাচ গুঁড়া ও কিশমিশ দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে, যেন লেগে না যায়। এবার এতে ছানা যোগ করুন। মিশ্রণটিতে বাকি সব উপকরণ ঢেলে নাড়তে থাকুন। ঘন ও আঠালো হয়ে এলে জাফরান ভেজানো পানি ঢেলে আরও কিছুক্ষণ নাড়ূন। একটি ডিশে অল্প ঘি মাখিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ঠাণ্ডা হলে সন্দেশ আকৃতিতে কেটে পরিবেশন করুন।
আলু মটরের ভুনা
উপকরণ : আলু কিউব করে কাটা ১
কাপ, মটরশুঁটি ১ কাপ, আদা-রসুন বাটা ১ চা চামচ, এলাচ-দারুচিনি ২-৩ টুকরা, ঘি আধা কাপ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, কাঁচামরিচ ফালি ২-৩টি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : প্যানে ঘি দিয়ে এলাচ, দারুচিনি ও আলু ভেজে নিতে হবে। এবার সব মসলা ও সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। মটরশুঁটি ঢেলে অল্প পানি দিয়ে মৃদু আঁচে রান্না করুন। আলু-মটর সিদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে ভাত বা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
ছানা-মটরশুঁটির ডালনা
উপকরণ : দুই কেজি দুধের ছানা, জিরা এক চিমটি, তেজপাতা কয়েকটি, গুঁড়া হলুদ, শুকনা মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, আদা বাটা, লবণ ও কাঁচা মরিচ স্বাদমতো।

প্রণালি : ছানার পানি ঝরিয়ে চিপে নিয়ে কিউব করে কাটুন। এগুলো সোনালি রং করে ভেজে নিন। তেলে তেজপাতা ও জিরা ফোড়ন দিন। অল্প পানিতে গুঁড়া হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনিয়া ও আদা বাটা দিয়ে কষান। কষানো মসলায় মটরশুঁটি ও কিউব করে কাটা আলু দিয়ে ২-৩ মিনিট নেড়ে ভেজে রাখা ছানার টুকরা দিয়ে আরও দুই মিনিট ভাজুন। এরপর লবণ ও গরম পানি দিয়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। ঝোল ঘন হয়ে এলে কাঁচা মরিচ আর ভাজা জিরার গুঁড়া দিয়ে নামান।
মটরশুঁটির টক
উপকরণ : মটরশুঁটি ২ কাপ, মুরগির কিমা আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ১ চা চামচ, রসুন
বাটা ১ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, টমেটো কুচি ৩টি, হলুদ, চিনি, লবণ স্বাদমতো, ফেটানো টক দই ১ টেবিল চামচ, তেল পরিমাণমতো, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মটরশুঁটি অল্প লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন।
২. তেল গরম হলে পেঁয়াজ, আদা, রসুন এক এক করে দিয়ে কষিয়ে নিন।
৩. মরিচ বাটা, টক দই ও টমেটো দিয়ে আরো একটু কষিয়ে কিমা দিন।
৪. মটরশুঁটি, হলুদ, লবণ, চিনি দিয়ে নেড়ে অল্প গরম পানি দিন।
৫. ফুটে উঠলে গরম মসলা দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।
মটরশুঁটির সালাদ
উপকরণ : মটরশুঁটি ১ কাপ, শসা কুচি আধা কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ২ চা চামচ, কাজু বাদাম/চীনা বাদাম (আধা ভাঙা) আধা কাপ, টমেটো সস আধা কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, ধনেপাতা কুচি সামান্য, চিনি আধা চা চামচ, লবণ স্বাদ মতো।
প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে মটরশুঁটি ফুটন্ত গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। একটি ডিশে সব উপকরণ সুন্দরভাবে মিশিয়ে মটরশুঁটি ও বাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার সালাদ।
মটরশুঁটি ঘুগনি
উপকরণ : মটরশুঁটি ১ কাপ, ডাবলি ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কোয়ার্টার কাপ, ধনেপাতা
কুচি ১ টেবিল চামচ, বিট লবণ আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, শুকনা মরিচ টালা ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, তেঁতুলের মাড় ১ টেবিল চামচ, লেবু ১টি, লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি : ডাবলি ভিজিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। মটরশুঁটিও সিদ্ধ করতে হবে। এবার ডাবলি ও মটরশুঁটি একত্রে সব গুঁড়া মসলা দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের সময় তেঁতুলের মাড়, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
মটরশুঁটির ক্ষীর
উপকরণ: মটরশুঁটি ২০০ গ্রাম, দুধ ২ লিটার, মাওয়া ১ কাপ, সুজি ১ টেবিল চামচ, এলাচ
৫-৬টি, বাদাম কুচি ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ কাপ।
প্রণালি: প্রথমে মটরশুঁটি আধা কাপ দুধ দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। দুধ ফুটিয়ে ঘন করুন। ফুটন্ত দুধে মটরশুঁটির পেস্ট ও সুজি দিয়ে মৃদু আঁচে নাড়তে থাকুন। মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে মাওয়া গুঁড়া করে দিন। চিনি ও এলাচ দিন। ঘন হলে নামিয়ে ওপরে বাদাম দিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
মটর পনির মাসালা
উপকরণ : পনির ৩০০ গ্রাম, মটর ১০০ গ্রাম, আদা বাটা ১/২ চামচ, রসুন বাটা ১/২ চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চামচ, কাঁচামরিচ স্লাইস ৩ টুকরো, কাজুবাদাম
বাটা ৫০ গ্রাম, দই ৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ বাটা ১০০ গ্রাম, গরম মসলার পাউডার ১/২ চামচ, টমেটো কেচাপ ১ চা চামচ, ঘি অথবা বাটার ১ চা চামচ, ধনে পাতা কুচি ১/২ চা চামচ, আদা স্লাইস ১/২ চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : পনির কিউব করে কেটে তেলে হাল্কা ভেজে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। মটরশুঁটি ডাল থেকে খোসা ছড়িয়ে মটর বের করে নিন। চুলায় তেল গরম করে এর মধ্যে সব মসলা দিয়ে ভালোমতো কষিয়ে নিন। মসলা পানি দিয়ে অন্ততপক্ষে ১/২ ঘণ্টা কষাতে হবে, যাতে মসলার রঙ সাদা হলদে হয়। মসলা কষানো হলে এর মধ্যে পনির ও মটরশুঁটি দিন। একটু পানি দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে দিয়ে ৫ মিনিট দমে থাকার পর গরম মসলা পাউডার, ধনেপাতা কুচি, আদা স্লাইস দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।দাম দিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
কিমা মটরশুঁটির ঘুগনি
উপকরণ : মটরশুঁটি ২ কাপ, কিমা (চিকেন বা মাটন কিমা) ১/২ কাপ, পেঁয়াজ বাঁটা ১টা, রসুন বাঁটা ১ চা চামচ, মরিচ বাঁটা ১ চা চামচ, আদা বাঁটা ১ চা চামচ, টমেটো ১টা
(কুচানো), হলুদ, লবণ ও চিনি স্বাদমতো, তেল পরিমাণ মতো, টক দই (ফেটানো) ১ চা চামচ, গরম মসলাগুঁড়া ১/২ চা চামচ।
প্রণালী : অল্প লবণ ও পানি দিয়ে মটরশুঁটি সেদ্ধ করে নিন। কিমা হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে পানি ও কিমা আলাদা করে রাখুন। কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন বাঁটা এক এক করে দিয়ে কষে নিতে হবে। এ বার মরিচ বাঁটা ও টক দই দিন। ভালো করে কষে নিয়ে টমেটো মেশাতে হবে। আরো একটু কষে লবণ, চিনি, হলুদ ও কিমা দিন। তারপর কড়াইশুঁটি দিন। নাড়াচাড়া করে কিমা সিদ্ধ পানি ঢেলে দিন। ফুটে উঠলে গরম মসলাগুঁড়া দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
মটরশুঁটির হালুয়া
উপকরণ : মটরশুঁটি ২ কাপ, ঘন দুধ ৩ কাপ, দারুচিনি ১ টুকরা, এলাচিগুঁড়া আধা চা-চামচ, লবঙ্গ ১টি, ঘি সিকি কাপ, কাজুবাদাম সিকি কাপ, কিশমিশ দেড় টেবিল-চামচ, নারকেল
কোরানো দেড় কাপ, চিনি দেড় কাপ, মাওয়া দেড় কাপ, লবণ এক চিমটি।
প্রণালি : মটরশুঁটি ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ১ কাপ দুধ ও এক চিমটি লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে পাটায় মিহি করে বেটে নিন।
কড়াইয়ে ঘি গরম করে দারুচিনি ও লবঙ্গের ফোড়ন দিয়ে সিকি চামচ এলাচিগুঁড়া দিন। তারপর তাতে মটরশুঁটিবাটা দিয়ে সঙ্গে ২ টেবিল-চামচ কাজুবাদাম ও ১ টেবিল-চামচ ঘি দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিন। এবার ৪ টেবিল-চামচ মাওয়া ও চিনি দিয়ে মিশিয়ে নাড়ুন। একটু ভাজা ভাজা হলে বাকি দুধ দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। খেয়াল রাখবেন, যেন হাঁড়ির তলায় বা কড়াইয়ের তলায় হালুয়া পোড়া না লাগে।
হালুয়া থেকে ঘি ছাড়া শুরু হলে নারকেল কোরা দিয়ে অনবরত নাড়ুন। খুন্তি থেকে হালুয়া ছেড়ে দিয়ে তা যখন কড়াইয়ের মাঝখানে জমা হবে এবং ঘি ছাড়বে, তখন বাকি কাজুবাদাম দিয়ে নেড়ে বাটিতে বেড়ে ওপর থেকে সামান্য মাওয়া ও নারকেল কোরা ছিটিয়ে ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন।