কৎবেল/কদবেল/Limonia acidissima।
কৎবেল বা 'কদবেল' এক
ধরনের ফল। এর খোলস শক্ত ও বেলের মত খসখসে। গাছ
২০-৫০ ফুট উঁচু হয়। কাঠ শক্ত ও
পাতা ঝরা বৃক্ষ। পাতা কামিনি ফুলের পাতার মত। পত্রদন্ডের ২ দিকে ৫-৭ পাতা থাকে।
২-৫ইঞ্চি ব্যাস বিশিষ্ট টেনিস বলের আকারের কৎবেল টক স্বাদের ফল। গাছে ছোট কাঁটা
থাকে। আগস্ট-নভেম্বর মাসে ফল পাকে। কাঠ শক্ত; ঘরবাড়ি তৈরিতে
ব্যবহার করা যায়। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম কপিত্থ। বৈজ্ঞানিক
নাম: Feronia Limonia Swingle. পরিবার: Rutaceae ইংরেজি
নাম: Elephant Apple/Monkey fruit/Limonia acidissima. শক্ত খোলকের
কারণে কদবেলকে Wood Apple বা Stone Appleও
বলা হয়। কদবেল বেরি জাতীয় ফল। কদবেলের বৈজ্ঞানিক নাম Limonia acidissima। এটি Rutaceae পরিবারভুক্ত।
কদবেলর পুষ্টিমূল্য
ন্যাশনাল
ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশনের বই অনুযায়ী,
প্রতি 100 গ্রামে নিম্নোক্ত
ধারণ করে:
মোট 134 kcal
64.২ ডিগ্রি আর্দ্রতা
7.1 গ্র।ম প্রোটিন
3.7 গ্রাম ফ্যাট
1.9g খনিজ পদার্থ
5 গ্রাম
ফাইবার
18.1 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
61
আই ইউ ক্যারোটিন
3
মিলি ভিটামিন সি
.04 মিঃ থিয়ামিন
.17 মিগ্র রিবফ্লাভিন
.8
মিঃ Niacin
130 মিলি ক্যালসিয়াম
110 মিমি ফসফরাস
.48 গ্রাম লোহা
41
মিগ্রা ম্যাগনেসিয়াম
.21 mg Chromium
.18 মি.জি. ম্যাগনিজ
.10 mg দস্তা
কদবেল আমাদের প্রত্যেকের কাছে খুবই পরিচিত একটি দেশীয় ফল। টক স্বাদের
রূচি
বর্ধক এই ফলটির রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ।
আসুন এই সুপরিচিত ফলটির গুনাগুণ সম্পর্কে জেনে নিই।
১। ব্রণ ও মেছতায় কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
২। কদবেল পাতার নির্যাস শ্বাসযন্ত্রের চিকিত্সায় কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। দুধ এবং চিনি দিয়ে কদবেলের পাতা মিশিয়ে খাওয়ালে শিশুদের পেটের ব্যথার
চিকিত্সায় চমত্কার কাজ করে।
৩। কদবেলের ফুল শুকিয়ে পাউডার করে সারা বছর সংরক্ষণ করে রাখা যায়। ফল
দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠবদ্ধতা, দীর্ঘস্থায়ী
আমাশয় দূর করে।
৪। এই ফল রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং বুক ধড়ফড় এবং রক্তের
নিম্নচাপ রোধেও সহায়ক। চিনি বা মিছরির সঙ্গে কদবেল পাউডার মিশিয়ে খেলে সঙ্গে
শরীরের
শক্তি বৃদ্ধি হয় এবং রক্তাল্পতাও দূর হয়।
৫। কদবেল উদ্দীপক ও মূত্রবর্ধক কাজে বিশেষ উপাদেয়। এ ফল নিয়মিত খেলে
কিডনি সুরক্ষিত রাখে।
৬। কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়।
ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেল মলম হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
৭। কদবেলের নির্যাস ব্যাপকভাবে ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য আয়ূর্বেদী
ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৮। কদবেল নারীদের হরমোনের অভাব সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে থাকে। এমনকি
স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার নিরাময় করে থাকে।
কদবেলের ভর্তা
যা যা লাগবে
বড় সাইজের পাকা কদবেল ২টা,
শুকনা মরিচ ভাজা ৫টা,
সরিষার তেল ১ চা চামচ,
বিট লবণ পরিমাণ মতো।
যেভাবে বানাবেন
প্রথমে কদবেল দু’টি ভেঙে একটি চামচের সাহাজ্যে খোসা থেকে কদবেল আলাদা
করে নিন। এরপর ভেজে রাখা পাঁচটি শুকনা মরিচ ভাজা গুড়া করে নিন।
এবার একটি পাত্রে কদবেল নিয়ে এর সাথে শুকনা মরিচ ভাজা গুড়া, সরিষার তেল এবং পরিমাণ মতো বিট লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন।
কদবেলের আচার তৈরির রেসিপি
উপকরনঃ
বড় সাইজের কদবেল – ৭/৮ টি, চিনি – ১ কাপ, সিরকা – ১ কাপ, সরিষার তেল – ২
টে চামচ, আস্ত পাঁচ
ফোঁড়ন – ১/২ চা চামচ, পাঁচ ফোঁড়ন
টালা গুঁড়া – ১ টে চামচ, মেথিঁ টালা
গুঁড়া – ১ টে চামচ, শুকনা মরিচ
টালা গুঁড়া – ১ চা চামচ, ধনে টালা গুঁড়া
– ১ চা চামচ, বিট লবন – ১ টে
চামচ, লবন – পরিমান
মত
প্রনালিঃ
প্রথমে কদবেল গুলো ভেঙ্গে ভেতরের অংশ বের করে রাখতে হবে। এরপর পাত্রে
সরিষার তেল দিয়ে গরম করে এতে আস্ত পাঁচ ফোড়ন দিয়ে কদবেল গুলো দিয়ে এতে চিনি ,সিরকা,লবন ,বিট লবন দিয়ে
নাড়তে হবে।আঠা আঠা হয়ে এলে সব গুড়াঁ মসলা দিয়ে নেড়ে চেড়ে নামিয়ে একটা বড় ডিশের উপর
ছড়িয়ে ১ দিন কড়া রোদে রেখে ছোট ছোট গোল বলের আকার করে আরো ২/৩ দিন রোদে দিলেই
সংরক্ষন করা যাবে ।
কৎবেলের টক ঝাল মিষ্টি আচার
No comments:
Post a Comment