Wednesday, September 16, 2015

ফলি মাছ ( Notopterus notopterus)

Notopteridae গোত্রের সদস্য যা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে পাওয়া যায়। এটি এর গোত্রের একমাত্র সদস্য। যদিও এই মাছ মিস্টি পানির মাছ, তবে Brackish water অর্থাৎ মিস্টি পানি থেকে বেশি কিন্তু লোনা পানি থেকে কম লবণাক্ত পানিতে এরা বিচরণ করে বলে জানা গেছে।বর্তমানে প্রজাতিটি এর গণের একমাত্র সদস্য হলেও বর্তমানে একে species complex হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।ফলি মাছ এক সময় ডোবা, পুকুর, খাল ও বিলে প্রচুর পরিমানে পাওয়া যেত । বর্তমানে ফলি মাছের চাষও হচ্ছে
দৈহিক গঠন
অত্যন্ত চাপা দেহের এই মাছটির স্থানীয় নাম ফলুই। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনা ছোট, পায়ু পাখনা লম্বা। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬০ সে.মি. হলেও বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৩৬ সে.মি. রেকর্ড করা হয়েছে।
জীবন চক্র
শৈবাল,পোকামাকড়,কাদা,বালি খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে থাকে। কখনও কখনও ছোট মাছ খেয়ে থাকে। প্রজননের সময় বর্ষাকাল এবং এক প্রজনন ঋতুতে ২৫ সে.মি. লম্বা মা মাছ ৩০০০ টি ডিম দিয়ে থাকে। আগাছা যুক্ত স্থানে বাসা করে ডিম ছাড়ে এবং ডিম আঠালো ও হলুদ রঙের। বাবা ও মা উভয় মাছই ডিম পাহারা দিয়ে থাকে।

আয়রন      দস্তা   ক্যালসিয়াম আয়োডিন সেলেনিয়াম ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম সোডিয়াম পটাসিয়াম
মিলিগ্রাম
    মিলিগ্রাম মিলিগ্রাম       μg              μg         মিলিগ্রাম    মিলিগ্রাম      মিলিগ্রাম     মিলিগ্রাম
     1.7          1.6     230           ND             22            270          34           53              280
100
g পরিবেশন
ক্যালরি 146
                                                          % দৈনিক মূল্য
মোট ফ্যাট
                             11.3 গ্রাম                     17%
    সম্পৃক্ত চর্বি                       4.6 গ্রাম                         23%
    ট্রান্স ফ্যাট                          3 গ্রাম
    Polyunsaturated ফ্যাট    3 গ্রাম
কলেস্টেরল
                             60 মিলিগ্রাম                  20%
মোট কার্বোহাইড্রেট
                  1 গ্রাম                            0%
প্রোটিন
                                15.4 গ্রাম                      31%
উপকরণ : ফলি মাছ ২টি, আলু ১টি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়ো দেড় চা চামচ, হলুদ ৩ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়ো ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়ো ৩ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি সামান্য, লবণ পরিমাণমতো।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মাছের কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। আলু সেদ্ধ করে পেস্ট করে মাছের সঙ্গে মেশান।
২. এরপর হলুদ, মরিচ, ধনে, জিরা গুঁড়ো, লবণ, গরম মসলা, ধনেপাতা মাখিয়ে কেকের মতো চ্যাপ্টা ও পুরু করে নিন।
৩. কড়াইতে পানি দিন। পানি ফুটতে শুরু করলে মাছটা দিন। সেদ্ধ হলে নামিয়ে ছুরি দিয়ে চৌকোনা করে কাটুন।
৪. অন্য কড়াইতে তেল দিয়ে পেঁয়াজ অল্প ভাজুন। সামান্য পানি ও সব মসলা দিন। মাছের টুকরোগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ রেঁধে নামিয়ে নিন।
উপকরণ
    ফলি মাছ -৬টি মাঝারি আকারের (আনুমানিক ৬০০ গ্রাম)
    টমেটো -মাঝারি আকারের ২ টি  ( প্রতিটি ৪-৬ টুকরো করে রাখুন)
    পেঁয়াজকুচি - ২ কাপ
    হলুদ গুঁড়া- ১ চা চামচ + ১চা চামচ
    লাল মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ  + ১চা চামচ
    জিরা গুঁড়া-১ চা চামচ 
    রসুন বাটা -১ এবং ১/২  চা চামচ
    তেল -১/২  কাপ
    লবণ  - ১ চা চামচ  + ৩/৪ চা চামচ বা আপনার স্বাদ অনুযায়ী
পদ্ধতি :
মাছ ধুয়ে অর্ধেক করে কেটে নিন। তাতে ১ চা চামচ হলুদ, ১ চা চামচ লাল মরিচের গুড়া এবং লবন দিয়ে মাখিয়ে রাখুন।
প্যানে ৪ চা চামচমত তেল গরম করে মাছগুলো উভয় পিঠ বাদামী করে ভেজে উঠিয়ে নিন।
বাকি তেল প্যানে দিয়ে পেঁয়াজ নরম করে ভেজে নিন। তারপর মাছ ছাড়া বাকি উপকরণগুলো দিয়ে ২-৩ মিনিট নাড়ুন।
ফলি মাছে টক রান্না
উপকরণ : ফলি মাছ আধা কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ৩-৪টি, ভাজার জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, আমড়া পাতলা করে কাটা ১টি, তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি : প্রথমে ফলি মাছ কেটে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর লবণ, হলুদগুঁড়া ও মরিচগুঁড়া মেখে মাছ ১০ মিনিট মেরিনেট করে নিতে হবে। ফ্রাইপ্যানে চুলায় দিয়ে তাতে তেল দিন। তেল গরম হলে কাটা পেঁয়াজ দিন। পেঁয়াজ সাদা হয়ে এলে মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া, পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, লবণ, সামান্য পানি দিয়ে কষান। কষানো হলে তাতে ১ কাপ পানি দিন এবং আমড়া কুচি করে দিন। অন্য একটি ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে ফলি মাছগুলো ভাল করে ভেজে নিন। মাছ ভাজা হলে ফুটন্ত ঝোলের মধ্যে দিন। দু একটি টমেটো পেস্ট করে দিন ঝোল ঘন হয়ে এলে। ভাজা জিরার গুঁড়া দিয়ে পরিবেশন করুন।
নারকেলি শাপলা ফলি
উপকরণ: ফলি মাছ দুটি (বড়), নারকেল বাটা তিন টেবিল চামচ, আদা বাটা আধা চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, রসুন বাটা এক চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচামরিচ পাঁচ-ছয়টা, মেথি আধা চা-চামচ, সয়াবিন তেল সিকি কাপ, পেঁয়াজ কুচি দুই টেবিল-চামচ।
প্রণালি: মাছ টুকরা করে লবণ ও হলুদ মেখে ভেজে রাখতে হবে। শাপলা ভাপ দিয়ে রাখতে হবে। অন্য পাত্রে তেল দিয়ে মেথির ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ ভাজতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি হলে সব মসলা ও লবণ দিয়ে কষাতে হবে। নারকেল দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে। নারকেল ভাজা ভাজা হলে সিকি কাপ পানি দিয়ে কষাতে হবে। এতে নারকেলের ক্রিমটা বেরিয়ে আসবে। এবার এক কাপ গরম পানি দিয়ে শাপলা, কাঁচামরিচ ও মাছগুলো বিছিয়ে দিয়ে ঢাকনা দিতে হবে। মাঝারি আঁচে মাখা মাখা ঝোল রেখে নামাতে হবে।

পরামর্শ : শাপলা লতা কুটে বেছে নিতে নিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটা লালচে কালো আবরণ পড়ে যায়। ফুটানো পানিতে দিয়ে ভাপিয়ে নিলে সেটা আবার টাটকা সবুজ রং ধারণ করবে। যেহেতু এটা পানিতে জন্মায়, তাই এর সেই নিজস্ব একটা মেটে গন্ধ আছে, ভাপিয়ে পানিটা নিংড়ে নিলে সেই গন্ধটাও দূর হয়ে যায়।

No comments:

Post a Comment